Opinion/Column

 



জঙ্গি অর্থায়ন  বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা

আবুল হোসেন খোকন

প্রায় ১৫ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশে মৌলবাদী জঙ্গি তৈরির কাজে প্রতি বছর ব্যয় করা হচ্ছে শত-সহস্র কোটি টাকা। এরমধ্যে শুধুমাত্র দেশব্যাপী মৌলবাদীরা যে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে তা থেকেই প্রতিমাসে নিট মুনাফা করছে দেড় হাজার কোটি টাকার মত। -বছর আগে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল বারকাতের গবেষণা অনুযায়ীই  তথ্য জানা গিয়েছিল। মানব উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের হিসেবে মতেএই মুনাফার এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয় জঙ্গি তৎপরতার পেছনেযা দিয়ে প্রতি বছর ১০ লাখ অনুসারী তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। এই নীট মুনাফার বাইরেও জঙ্গি মৌলবাদীদের সহায়তায় বিদেশ থেকে মিলছে বিপূল পেট্রো-ডলার এবং দেশের ভেতরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজী  দান-অনুদান থেকে। বিভিন্ন অনুসন্ধান থেকে এরইমধ্যে জানা গেছে২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পাঁচ বছরে শত শত এনজিও অনুমোদন পেয়েছে। শুধুমাত্র ওই সময়ে জামায়াত সেক্রেটারি  সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদই  শতাধিক এনজিওকে অনুমোদন দিয়েছিলেন। এনজিও ব্যুরোর তথ্যে দেখা গেছেওই পাঁচ বছরে ১১ হাজারেরও বেশি এনজিওর মাধ্যমে দেশে ৯০ হাজার কোটি টাকা এসেছেযা ওই সময়ের বার্ষিক জাতীয় বাজেটর প্রায় সমান।

অনুসন্ধান থেকে ধারণা দেওয়া হয়ওই অর্থের বড় অংশই ব্যয় হয়েছে জঙ্গি মৌলবাদীদের সাংগঠনিক কাজে। আরও দেখা  গেছেএনজিওর মাধ্যমে জঙ্গিদের অর্থায়নে শীর্ষে ছিল সৌদি আরব-কুয়েত-কাতার-সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশযারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে পরিচিত। আর বাংলাদেশে ওই অর্থ সরবরাহ হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম ছাড়াও বেশ কতগুলো ব্যাংকের মাধ্যমে। বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ওই সময় বিষয়টি ধরা পড়েছে এবং এরজন্য ইসলামী ব্যাংককে জরিমানাও দিতে হয়েছে। এক হিসেবে দেখা গেছে১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগের শাসনকালীন সময়ে দেশে জঙ্গি মৌলবাদী সংগঠনের সংখ্যা ছিল ৩টির মতো। পক্ষান্তরে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে সে সংখ্যা দাঁড়িয়ে যায় ১০৭টিতে। তারপর এক দশকে এই মৌলবাদী সংগঠনগুলো গ্রেনেড  বোমা হামলা চালিয়েছে ৪৮ দফায় এবং এতে মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ১৭৮ জন।

ধারণা পাওয়া গেছেমৌলবাদীদের সহায়তাকারী এনজিওগুলো জঙ্গি নেটওয়ার্ক বিস্তারে গড়ে তুলেছে অজস্র মাদ্রাসা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এইসব প্রতিষ্ঠানকে জঙ্গি মৌলবাদীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজে ব্যবহার করা হয়। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নিশ্চিত হয়৩৩টি এনজিও সরাসারি দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসার উন্নয়নের নামে অর্থ জোগান দিয়েছে। আর এসব মাদ্রাসা নিষিদ্ধ ঘোষিত ৫টি সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি সংগঠনের সাড়ে  হাজার নেতা-কর্মীকে লালন-পালন করেছে।

 অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই দেশের  যে কোন নাগরিক প্রশ্ন তুলতে পারেন যেদেশব্যাপী এই যে শত-সহস্র এনজিও তৎপর রয়েছে তারা আসলে কি করছেকেন করছে এবং কার স্বার্থে করছেএরা যে তখনকরা এক বছরের জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান ৯০ হাজার কোটি টাকা এনে খরচ করেছেÑ তা কোথায়তাদের তৎপরতা থেকে এই দেশে দারিদ্র দূর হয়েছিল কিসত্যি সত্যিই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছিল কিদেশে বেকারত্ব হ্রাস পেয়েছিল কিসুশিক্ষার বিস্তৃতি ঘটেছিল কিবৈরি পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসতে মানুষ স্বাবলম্বি হয়েছিল কিদুর্যোগ-দুর্ভোগ মোকাবেলায় মানুষ বা দেশ স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছিল কিজনগণের জন্য প্রত্যাশিত সচেতনতা এসেছিল কিএইসব বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর যদি ইতিবাচকই হতোÑ তাহলে উল্টো বাস্তবতা দেখা যেতো না। সুতরাং বলা যায়কিছু এনজিওর মানবাধিকার  সেবামূলক কাজ ছাড়া আসল কাজের তেমন কিছুই হয়নি। ফলে মানুষের দারিদ্রতা বেড়েছিল এবং তা পাল্লা দিয়ে চলছিল। আর বলার অপেক্ষা রাখে নাদারিদ্রের কারণে জঙ্গি তৈরির সুযোগ বা পথও খোলাশা থেকেছে। দেশে প্রয়োজনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়নি বলেই অধঃপাত বেড়েছে। বেকারত্ব হ্রাস পায়নি বলেই কর্মক্ষম কর্মহীনের সংখ্যা কেবল বেড়েছে। সুশিক্ষা মেলেনি বলেই বৃহত্তর মানুষ পিছিয়ে পড়েছে। অশিক্ষা-কুশিক্ষার বিস্তৃতি থেকেছে বলেই নারীরাও জঙ্গি হয়েছে। মানুষ বৈরি পরিবেশ থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ না পেয়ে অস্বাভাবিক পথে গেছে। বৃহত্তর জনগণ দুর্যোগ-দুর্ভোগে কেবলই সর্বস্বান্ত হয়েছে। প্রত্যাশিত সচেতনতার অভাবে জনগণকে প্রতিনিয়তই নানা ক্ষেত্রে বিপর্যস্ত হতে হয়েছে। বলা যায়এইসব প্রধান জায়গাগুলোর উন্নয়ন না হলেও জাতীয় বাজেটের সমপরিমাণ অর্থে জঙ্গি তৈরি হয়েছেপাশাপাশি একশ্রেণীর এনজিওর কর্মকর্তাদের বাড়ি-গাড়ি আর বিত্ত্বের প্রসার ঘটেছেসেইসঙ্গে এনজিওর মাধ্যমে বেড়েছে তাদের ব্যবসায়িক  আয়ের ক্ষেত্র। আর বাংলাদেশ কেবলই পরনির্ভর-ঋণনির্ভর এবং বিশ্ববাজারি সাম্রাজ্যবাদের পণ্যবাজারে পরিণত হয়েছেক্রিড়নকে পরিণত হয়েছে।

সুতরাং দিন বদলের প্রয়োজনে এই বাস্তবতা এবং অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা যেমন জরুরি ছিলতেমন বিষয়গুলো শিক্ষণীয়ও ছিল। এখন সেই অবস্থা থেকে অনেকটা বেরিয়ে এলেও পরিস্থিতি যে পুরো পাল্টে গেছে তা বলা যাবে না। কারণ তলে তলে চলছে নানা তৎপরতা। এটা লক্ষ্য করা যাবেঅনেক পর্যায়ে ধর্মান্ধতা এবং ধর্মের নামে পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবহার দেখে। ছোট-বড় শহর এবং গ্রামের দিকে তাকালে  বিষয়ে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। দেখা যাবেআগের চাইতে ধর্মের নামে ভন্ডামি মার্কা লেবাসের দোর্দন্ড প্রতাপ।

কিন্তু  লক্ষণ ভয়াবহ বিপদের। ভেতরে ভেতরে তৈরি হচ্ছেবা জন্ম নিচ্ছে জঙ্গিদের প্রেতাত্ত্বা।  প্রক্রিয়া রুখতে না পারলে ভবিষ্যত পরিণত মোটেও শুভ হবে না। সুতরাং গোড়ায় হাত দিতে হবে। সত্যিকারভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূলে এদের অর্থনৈতিক ভিত্তি বা নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া দরকার। যে সমস্ত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এখানে তৎপরÑ তাদের সবার উপর সরকার এবং জনগণের জবাবদিহিতা শতভাগ নিশ্চিত করা দরকার। উন্নয়নের নামে এরা যাতে এদেশে জঙ্গিবাদ পয়দা করতে না পারেহর্তাকর্তারা আঙ্গুল ফুড়ে কলাগাছ হতে না পারেরাজনীতি করে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস  হুমকীর মুখে ফেলতে না পারেসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারেমুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বহুল প্রত্যাশিত আত্মনির্ভরশীল-স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জায়গায় যেন সাম্রাজ্যবাদী আর্থ-রাজনীতির বাজার গড়ে তোলা সম্ভব না হয়Ñ তা দেখতে হবে। বিশেষ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো এবং জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহৃত জায়গাগুলোর খোল-নলচে পাল্টে দেওয়া দারকার। দরকার এসব ক্ষেত্রে সরকার এবং জনগণের পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপন করার। তাহলেই কেবল দেশের মানুষকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো সম্ভব।




Capitalism builds its nest

in the brains of the poor

- Abul Hossain Khokon

The truth of the title is now prevalent in the underdeveloped or poor countries of the world. A man who is desperate to bring salt to Bangladesh also thinks of benefiting himself by deceiving another person. Because the mentality of looting has taken place in his brain. When the state, society and overall management nurture this mentality, create madness and play no role in the hindrance in this regard-- Then everything rots, everything sinks into the sea of ​​decay. That's what happened here. And this is the effective form of capitalist management. Here lies the success of imperialism.

What exactly is capitalism? Does it simply raise a class higher in wealth through exploitation? No, it's not. Because, in order to sustain capitalism, its main character has to be practiced at all levels. That character is to be able to establish such a mind-set or thought-consciousness or desire-Which is desperate to cheat, abuse, deceive, coerce another (whoever he may be) for personal gain. Apart from this, all necessary techniques are applied. There is no kindness in this mentality, there is no humanity, patriotism etc. There are no pledges, commitments, or organized goals to get out of such a position. There is only the thought of cheating and enjoying, enjoying and cheating. And to be able to normalize it is the success of capitalism and its page holder imperialism.

This character today is not only among the rich, but it stands with pride from top to bottom. That is why today it is not enough to blame only the rich class or their exploitation, rule, plunder. This fault is now from house to house, from brain to brain, from person to person. Because everyone has understood that there is no benefit from being honest, from being good, from people like people.

Animalism is now the only way to survive. Let's not rise to the rich class in the fight for survival, better to survive than to perish! And if you can live, luck can take you to the top! At least you won't die without eating or falling. This idea is today's reality.

Like other underdeveloped, poor or needy countries, the poor of Bangladesh are in a special position. The character who pretends to be a good person when necessary, especially the religious places of worship including mosques, temples, churches, referring to religion as 'the last thing in life'. But the good words and deeds of religion - none of them are reflected in the individual's life. This is the other side of capitalist-imperial character.

If you notice, you will see that more than 90% of the people of our country believe in the Muslim religion. More than 90% of these people are apparently ready to sacrifice their lives in the name of religion. But if they really believe in religion, consider religion as the best - then in this Muslim country, bribery, corruption, injustice, tyranny, irregularity, adultery, food adulteration, profiting by increasing the price of everyday goods at one jump, deceiving people, He did not do bad things including harming people. There was no question of committing such a sin. This country, this society was supposed to become a paradise. But where? It did not happen! So what is Muslim? What is religious? What is a good person?

Unfortunately, the injustices are now being done by us very common people on a large scale. It's not just the rich, but the poor or the very poor as a whole. Arguing that we are exploited, deprived, poor, poor. In fact, capitalism-imperialism has infused the character of capitalism-imperialism into the sub-atoms of our bodies, starting from our brains through the foundation of these lame arguments and beliefs. Unknowingly, the great enemy has captured us. As a result we have become its followers or slaves.

But the question is, can we really benefit by being loyal or slaves? Or can I ever? No, We can't. Rather, from under this mass, we will only keep the enemy on the neck. I will give them a chance to live long. Because this is what accounting, social science, and history say.

We can never rise above leaving our destitute and destroyed side on all fours. In this case, there is only one way, that is to to unite. Must stand together.

It should be remembered that I cannot return my fortune by hypocrisy in the name of religion, by jumping into the sea of ​​greed, by turning myself into an animal instead of a human being. Rather, those who control fate will continue to flourish. All we have to do is destroy and destroy. So today we have to think - we want to destroy? not to live?.

 










রাশিয়া-ইউক্রেন

যুদ্ধের রহস্য

আবুল হোসেন খোকন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বয়স এক বছরে পা দিতে চলেছে এই যুদ্ধে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছেকিন্তু জয়-পরাজয়ের খবর নেই পরাশক্তি পর্যায়ের দেশ রাশিয়াও দুর্বল ইউক্রেনকে পরাজিত করতে পারেনিআবার তাবৎ পশ্চিমা শক্তির সমর্থন এবং সামরিক সাজ-সরঞ্জাম পেয়েও রাশিয়ার কিছু করতে পারেনি ইউক্রেন অর্থাৎ এক ধরণের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চলছেতাতে মানুষ মরছেসম্পদ ধ্বংস হচ্ছেঅস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের মহোৎসব চলছে কিন্তু কারও জয়-পরাজয় ঘটছে না আর এই রহস্যময় মহোৎসব চলছে মাসের পর মাস ধরে বলার অপেক্ষা রাখে না মহোৎসব আরও দীর্ঘ সময় চলতেই থাকবে

প্রশ্ন হলোএরকম ঘটনার আসল রহস্য কিএর জবাব একটা হতে পারে যেইউক্রেনের আশা ছিল পশ্চিমা সহায়তায় নিজের দেশঅথবা অর্থ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট জেলোনস্কির নিজস্ব গোষ্ঠীর ব্যাপক উত্থান রচনা করা এইসঙ্গে আশা ছিলপশ্চিমাদের খুশী করতে তাদের শত্রু রাশিয়ারও কবর রচনা করা

আমরা যদি এই জবাবের বিষয় খতিয়ে দেখিতাহলে দেখা যাবেদুই আশার কোন আশাই পূরণ হয়নিহবার সম্ভাবনাও নেই বরং ইউক্রেন নামের দেশটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংসস্তুপ বা বিদ্ধস্ত হয়ে চলেছে এছাড়া পশ্চিমা অস্ত্র সহায়তার ফলে অর্থনৈতিক ঋণের পরিমাণও এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছেযা শেষ পর্যন্ত দেশটি বিক্রি করে দিলেও শোধ করা যাবে না

এবার উপরের প্রশ্নের আরেকটি জবাব দেখা যাক এটা হতে পারেরাশিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট জেলোনস্কি চাইছিলেন হিটলারের Ôনাৎসীজম কে চাঙা করার নেতৃত্ব দিয়ে তিনি হিরো হবেন ইউক্রেন থেকে অন্য জাতি-গোষ্ঠিীকে হটিয়ে বা নির্মূল করে তিনি সর্বেসর্বা হয়ে উঠবেন

 জবাবের বিশ্লেষণও বলবেজেলোনস্কি হিরোও হতে পারেননিসর্বেসর্বাও হতে পারেননি যুদ্ধে জয় অর্জন না হলে তো এটা হতে পারেও না যদিও তার পশ্চিমা বন্ধুরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে বা খেতাব দিয়ে তাকে হিরো বলে স্বীকৃতি দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এর যে আসলে কোন মূল্যও নেইঅর্থও নেইতা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না সুতরাং এখানেও ফলাফল শূন্য

আর প্রশ্নের জবাব আরেকটা হতে পারে সেটা হলোপ্রেসিডেন্ট জেলোনস্কি চমক সৃষ্টি করে ইউক্রেনকে ন্যাটোভূক্ত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন যাতে করে পশ্চিমাদের আর্শিবাদে দেশকে বা নিজের গোষ্ঠীকে ধন্য করতে পারেন

দেখা যাচ্ছেবাস্তবে ফলাফল ষোলকলা পূর্ণ করতে পারেনি কারণ ন্যাটোভূক্ত করবোকরছিকরা হবেএই করা হলোইত্যাদি বলে বলে যেভাবে সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে এবং শেষমেষ নামকা ওয়াস্তে সদস্যভূক্ত করার খাতায় নাম তুলে যেভাবে Ôপ্রক্রিয়ার ফেরে ফেলা হয়েছেতাতেকরে এখনও সব ঝুলে আছে আর আগেই উল্লেখ করা হয়েছেধন্য হওয়ার কাজটিও হাসিল হয়নি জেলোনস্কি হয়তো ভাবেননিন্যাটোভূক্ত হওয়ার কথাটায় রাশিয়া এমন চটে যাবে যেসোজা সামরিক অভিযানই শুরু করে দেবে তিনি যা ভাবেননিসেটাই হয়েছে যা থেকে এখন তাবৎ পশ্চিমা শক্তিকে যোগ করেও পার পাওয়া যাচ্ছে না বরং পশ্চিমারা কখনও Ôচালিয়ে যাও যুদ্ধআরও দেবো অস্ত্র আবার কখনও বলছে Ôরুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটা আপোস-রফা করো সবমিলে মহাবিপাকমহা জটিলতা সেইসঙ্গে সময়ের পর সময় ফলাফল শূন্য গড়িয়ে যাওয়া যাকে বলা যেতে পারে Ôক্যাঁচকা কলে পড়ে  যাওয়া অবস্থা

তবে আর যাইহোকএরকম জবাব আর প্রশ্ন যতোই থাকরাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটা ঘটনা বা রহস্য তো আছেই এর কিছু কিছু খোলাশা হওয়াও শুরু হয়েছে যেমন যুদ্ধের তো একটা লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থাকবে সেটা যুদ্ধ জয় করেই অর্জন করা সম্ভব কিন্তু যেখানে জয়ও হচ্ছে নাপরাজয়ও হচ্ছে নাযুদ্ধ চলছেইকাঁড়ি কাঁড়ি অস্ত্র খরচ হচ্ছেমস্তিষ্কক্ষরণ হচ্ছেগোটা বিশ্ব সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেসদরে-অন্দরে গণবিক্ষোভ তৈরি হচ্ছে অশান্ত হয়ে উঠছে গোটা পরিস্থিতি যদিও পশ্চিমাদের একটা লাভ হচ্ছে নিশ্চিত সেটা হলো জেলোনস্কির দেশকে দেনা বা ঋণের দায়ে জর্জরিত করে ফেলা হচ্ছেপাশাপাশি নিজেদের অস্ত্র বিক্রি ব্যবসার রমরমা অবস্থা চলছে কিন্তু সবকিছু বিপর্যয়ের দিকে চলে গেলে ব্যবসার লাভ দিয়ে তো শেষ রক্ষা হবে না এটা যেকেউ বোঝে না তা কিন্তু নয় তারপরেও যুদ্ধ চলছেবিপর্যয় দোর্দন্ড প্রতাপে বাড়ছে

এই বাস্তবতায় একটা জিনিস কিন্তু পরিস্কার হয়ে গেছে সেটা হলোযুদ্ধটা আসলে রাশিয়া-ইউক্রেন নামে চলছে বটেপ্রকৃতপক্ষে হচ্ছে অন্য এক যুদ্ধ বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভেতরে ভেতরে রুশ বলয় এবং মার্কিন বলয়ের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছিল জিজ্ঞাস্য হয়ে উঠেছিলআগামীতে বিশ্ব কার কর্তৃত্বে চলবেরুশ বলয়েনাকি মার্কিন বলয়ে ব্যাপারে এতোদিন ধরে একক পরাশক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্টের মনে হচ্ছিলএই এককত্ব বুঝি হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে আর সময় গড়ালে  জায়গাটা প্রতিপক্ষের হাতে চলে যেতে পারে কারণ পারমানবিক অস্ত্রের ভান্ডার সমৃদ্ধ রাশিয়া  চীনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে উত্তর কোরিয়াইরান তাদের সমর্থনে রয়েছে আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো এইসঙ্গে রুশ বলয়ে নতুন প্রজন্মের সামরিক শক্তি দিনকে দিন কেবল বেড়েই চলেছে এভাবে চলতে থাকলে এমনিতেই মার্কিল বলয়ের পতন অনিবার্য হয়ে উঠবে সুতরাং তাদের সামনে একটা প্রস্তুতির বিকল্প ছিল না প্রস্তুতি মানেবুদ্ধি এবং সামরিক সক্ষমতার প্রমাণ যাচাই করা জরুরি হয়ে উঠেছিল আরও পরিস্কার করে বললে মানে দাঁড়ায়প্রতিপক্ষকে রুখতে যুদ্ধশক্তির একটা রিহার্সেল করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু সেটার জন্য একটা স্টেজ বা মঞ্চ প্রয়োজন সেই মঞ্চে উভয় পক্ষ মহড়া চলাতে পারলে ভবিষ্যত যুদ্ধ এবং জয়-পরাজয়ের একটা ধারণা পাওয়া সম্ভব

ঠিক একই ঘটনা রুশ বলয়ের জন্যও প্রযোজ্য তারাও একটা ধারণা পেতে চাইছিল যেপারমানবিক যুদ্ধকিংবা বিশ্বযুদ্ধ হলে জয়-পরাজয়ের কী হতে পারেএজন্য তাদের কাছেও একটা মঞ্চ এবং সেখানে উভয় পক্ষের মহড়ার প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে উঠেছিল  অবস্থায় জিজ্ঞাস্য হয়ে উঠেছিলমঞ্চ পাওয়া যাবে কোথায়কোন্ দেশ মঞ্চ হতে পারে?

অবশেষ দেখা যাচ্ছেএই মহড়া বা রিহার্সেলের জন্য মঞ্চ হিসেবে ইউক্রেন নামক দেশটিকে হাজির করেছেন ভলোদিমির জেলোনেস্কি আর তা লুফে নিয়ে মহড়ারিহার্সেল বা শক্তিমত্তার সামর্থ্য যাচাই করছে দুই পক্ষ এই মহড়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে মার্কিন বলয়ের সামরিক শক্তি আরেকদিকে রাশিয়া ব্যবহার করছে তার সামরিক শক্তি এভাবে যুদ্ধের আসল মহড়া চলছে রুশ বলয় এবং মার্কিন বলয়ের মধ্যে উভয় পক্ষই কৌশলী তারা কেউ কাউকেই প্রমাণ করতে চাইছে না যেতারাই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী বা বিজয়ী কারণ বিজয়ী হওয়ার ঘটনা ঘটালে তো গোমর ফাঁক হয়ে যাবে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুঝে যাবে তার শক্তি  বুদ্ধি মত্ত্বার ক্ষমতাএকইভাবে রাশিয়াও বুঝে যাবে তার ক্ষমতা  কারণে কেউ বিজয়ীও হচ্ছে নাকেউ পরাজিতও হচ্ছে না কখনও কেউ ভান করছেতারা দুর্বল হয়ে পড়েছে এভাবে তারা অপরপক্ষের বুদ্ধি-মত্ত্বা যাচাই করতে চাইছে আরেক পক্ষও ব্যাপারটা বুঝতে পেরে নিজেদের খোলাসা করছে না তারাও কখনও পিছুহটাকখনও আগে বাড়াআবার পিছু হটা কৌশল বজায় রেখেছে এভাবে যাচাই চলছে একে-অপরের শক্তি  বুদ্ধির কিন্তু কেউ ধরা দিতে চাইছে না বলেই মহড়া থামছে না শেষ হচ্ছে না ইউক্রেন যুদ্ধ যতোক্ষণ না একে অপরে পরস্পরের বিষয় সম্পর্কে সুনিশ্চিত না হবেততোক্ষণ পর্যন্ত এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা যে বন্ধ হবেতা মনে হচ্ছে না প্রকৃতপক্ষে প্রায় এক বছরের কাছাকাছির এই মহড়ায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই পরিস্কার হতে পারেনি যেসত্যিকারে যুদ্ধ শুরু হলে কার জয় হবেকার পরাজয় ঘটবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হতে পারছে না যেআগামী দিনে তার পক্ষে পরাশক্তি থাকা সম্ভব হবে কিহবে না বিশ্বযুদ্ধ হলে তাদেরই জয় হবে কিহবে না একই ব্যাপার আরেক পক্ষেও ফলে রহস্যময় ইউক্রেন যুদ্ধ চলছেই











Russia-Ukraine the Secret of War
- Abul Hossain Khokon

The Russia-Ukraine war is about to turn a year old. In this war there is a huge loss of life and property, but there is no news of victory or defeat. Even the superpower Russia could not defeat the weak Ukraine, and even with the support and military equipment of the Western powers, Ukraine could not do anything about Russia. That is, a kind of war war game is going on; People are dying, property is being destroyed, and the festival of using weapons is going on. But no one is winning or losing. And this mysterious festival is going on for months. Needless to say, this festival will continue for a long time.

The question is - what is the real secret of such events? The answer could be that Ukraine hoped to orchestrate a massive rise in its own country with Western aid, or President Zelonsky's own group in finance and other areas. Also, the hope was to please the West by creating the grave of their enemy Russia.

If we examine this answer, it will be seen that neither of the two hopes has been fulfilled, nor is it likely to be. Instead, the country named Ukraine is being destroyed by missiles. In addition, the economic debt due to Western arms support is also increasing to a level that cannot be repaid even if the country is eventually sold.

Now let's see another answer to the above question. It may be that, according to Russian commentary, President Zelonsky wanted to be a hero by leading the promotion of Hitler's 'Nazism'. He will become omnipotent by removing or exterminating other ethnic groups from Ukraine.

The analysis of this answer will also say - Zelonsky could not be a hero, nor could he be omnipotent. It cannot happen unless the war is won. Although his western friends continue to promote and recognize him as a hero by giving titles. But it goes without saying that it has no value, no meaning. So here too the result is null.

And the answer to the question can be another. That is, President Zhelonsky wanted to make Ukraine a NATO member by creating a surprise. So that you can bless the country or your group with the blessings of the West.

As it turns out, in reality the results did not complete the 16th grade. Because the time was wasted by saying that we will join NATO, we are doing it, we are doing it, this is done - etc. And as mentioned earlier, the act of being blessed was not achieved either. Zhelonsky may not have thought that Russia would be so obsessed with joining NATO that it would start a direct military campaign. What he did not expect, happened. Which cannot be overcome even with the help of Western powers. Rather, the West sometimes says "continue the war, give more weapons" and sometimes says "make a compromise with the Russian president". All in all, great trouble, great complexity. As well as time after time the results are falling to zero. What can be called a 'whiskering faucet' situation.

But anyway, no matter how many such answers and questions there are - there is a story or a mystery about the Russia-Ukraine war. Some of it has also started to open up. For example, war will have a purpose. It can be achieved by winning the war. But where there is no victory, no defeat, the war is going on, weapons are being consumed, brain drain is taking place, the whole world is suffering from crisis, mass protests are being created at headquarters and inside. The whole situation is becoming turbulent. Although the West is definitely gaining. That is, Zelonsky's country is saddled with debt, while its own arms trade is booming. But if everything turns to disaster, business profits will not save the end. It is not that no one understands. Yet the war rages on, the disaster looms large. But one thing is clear in this reality. That is - the war is actually going on in the name of Russia-Ukraine, in fact there is another war. The cold war between the Russian circle and the American circle for control of the world reached its final stage. The question was, in the future, the world will continue under whose authority? In the Russian ring, or in the American ring? In this regard, the United States of America as a single superpower seemed to be under threat for a long time. And with time, this place can go to the opponent. Because North Korea and Iran are connected with Russia and China, which have nuclear weapons. They are supported by African and Latin American countries. Along with this, the military power of the new generation in the Russian ring is only increasing day by day. If this continues, the collapse of the Merkle Ring will become inevitable. So they had no option to prepare. By means of preparation, it became necessary to verify evidence of intelligence and military capability. More precisely, it means that a rehearsal of combat power is necessary to stop the opponent. But that requires a stage. If both sides can rehearse on that stage, it is possible to get an idea of ​​future battles and victories and defeats.

The same applies to the Russian ring. They also wanted to get an idea of ​​what would happen if there was a nuclear war or a world war. That is why they also needed a stage where both sides could rehearse. In this situation, the question became - where can the stage be found, which country can be the stage?

It appears that Volodymyr Zhelonesky presented Ukraine as a stage for this rehearsal. And taking advantage of it, both sides are checking the ability of drill, rehearsal or strength. US arms forces are being used in this exercise. On the other hand, Russia is using its military power. In this way, the real rehearsal of the war is going on between the Russian ring and the US ring. Both sides are strategic. They are not trying to prove to anyone that they are the most powerful or victorious. Because if the event of victory happens, Gomor will be empty. Just as the United States will understand its power and intellectual capabilities, so will Russia. Because of this no one is winning and no one is losing. Sometimes someone pretends - they are weak. In this way, they want to check the intelligence of the other party. The other side is also not opening themselves after understanding the matter. They have also maintained a strategy of sometimes retreating, sometimes advancing, and retreating. In this way, each other's strength and intelligence are being tested. But the exercise does not stop because no one wants to catch up. The war in Ukraine is not over. It doesn't look like this war game will stop until each other is sure about each other's affairs. In fact, in this exercise of almost a year, no side could be clear until now, who will win and who will lose if the war actually starts. The United States is not sure whether it will be a superpower in the future. If there is a world war, they will win or not. Same thing on the other side. As a result, the mysterious Ukraine war continues.

 

পুঁজিবাদ শুধু ধনিক নয়

অতি গরিবেও ভর করে

আবুল হোসেন খোকন

 

শিরোনামের সত্যতা বিশ্বের অনুন্নত বা গরীব দেশগুলোতে এখন জলজ্যান্ত বাংলাদেশে একজন নুন আনতে পান্তা ফুরানো লোকও আরেকজনকে ঠকিয়ে নিজে লাভবান হওয়ার চিন্তা করেন কারণ তার মগজ জুড়ে স্থান করে নিয়েছে লুণ্ঠনের মানসিকতা রাষ্ট্রসমাজ এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা যখন এই মনোবৃত্তিকে লালন করেউন্মাদনা জোগায় এবং  ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতায় কোন রকম ভূমিকা না রাখেতখন সবকিছুতেই পচন ধরেসবকিছুই নষ্টের সাগরে নিমজ্জিত হয় এখানে সেটাই হয়েছে আর এটাই হলো পুঁজিবাদী ব্যবস্থাপনার সার্থক রূপ সাম্রাজ্যবাদের সাফল্যটা এখানেই

পুঁজিবাদ আসলে কিতা কি শুধু শোষণের মাধ্যমে ধন-সম্পদের দিক থেকেই একটি শ্রেণীকে উপর থেকে আরও উপরে তোলেনাতা কিন্তু নয় কারণপুঁজিবাদকে টিকিয়ে রাখতে হলে এর মূল চরিত্রকে সর্বস্তরে প্রথিত করতে হয় সেই চরিত্রটা হলএমন এক মন-মানসিকতা বা চিন্তা-চেতনা কিংবা মনোবাঞ্ছা প্রতিষ্ঠিত করতে পারাযা ব্যক্তি স্বার্থের জন্য অপরকে (সে যেই হোক না কেনঠকাতেবঞ্ছনা করতেপ্রতারিত করতেজবরদস্তি করতে মরিয়া থাকে এর বাইরেও প্রয়োজনীয় সব কৌশলেরই প্রয়োগ ঘটায় এই মানসিকতায় কোন দয়া-মায়া থাকে নাথাকে না মানবতাদেশপ্রেম ইত্যাদি কোন কিছুই থাকে  নাএমন অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কোন রকম প্রতিজ্ঞাঅঙ্গীকারবা সংগঠিত হওয়ার লক্ষ্য এখানে থাকে শুধু ঠকানো আর ভোগ করাভোগ করা আর ঠকানোর চিন্তা আর এটাকে স্বাভাবিক করতে পারাটাই হলো পুঁজিবাদ এবং এর পৃষ্ঠাপোষক সাম্রাজ্যবাদের সফলতা

এই চরিত্র আজ শুধু ধনিক গোষ্ঠীর মধ্যেই নয়এটা উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দোদর্প্রতাপের সঙ্গে অবস্থান করছে  যে কারণে আজ শুধু ধনিক শ্রেণী বা তাদের শোষণশাসনলুণ্ঠনকে দোষারোপ করলে চলবে না  দোষটা এখন ঘরে ঘরেমগজে মগজেমানুষে মানুষে কারণ সবাই বুঝে গেছেন সৎ থেকেভাল থেকেমানুষের মত মানুষ থেকে কোন লাভ নেই পশুত্বই এখন টিকে থাকার একমাত্র উপায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ধনিক শ্রেণীতে উন্নীত হওয়া না যাকধ্বংস হয়ে যাওয়ার চেয়ে কোন রকমে বেঁচে থাকা তো যেতে পারেআর বাঁচতে পারলে ভাগ্য তো উপরের দিকেও নিয়ে যেতে পারেঅন্তত না খেয়েনা পড়েমরে যেতে তো হবে না এই ভাবনাটাই হলো আজকের বাস্তবতা

অনুন্নতগরীব বা অভাবী অন্য দেশগুলোর মতই বাংলাদেশের গরীবরাও বিশেষ এই চারিত্রিক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছেন যে চরিত্র প্রয়োজনে মুখে ভাল মানুষীর ভান করেবিশেষ করে ধর্মকে 'জীবনের সর্বশেষ্ঠ বিষয় উল্লেখ করে মসজিদমন্দিরগীর্জাসহ ধর্ম উপাসনালয়গুলো হুমরি খেয়ে পড়ায় কিন্তু ধর্মের যে ভাল ভাল কথাকাজ রয়েছেসেগুলোর কোনটাই ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত হয় না এটা হলো পুঁজিবাদী- সাম্রাজ্যবাদী চরিত্রের অন্যমত দিক

লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবোআমাদের দেশের ৯০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলমান ধর্মে বিশ্বাসী এই ৯০ ভাগের আবার অধের্কের বেশি মানুষ ধর্মের নামে জীবন উৎসর্গ করতেও দৃশ্যত প্রস্তুত কিন্তু সত্যিই যদি তারা ধর্মে বিশ্বাসী হনধর্মকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করেনতাহলে তো এই মুসলমানের দেশে ঘুষদুর্নীতিঅন্যায়অত্যাচারঅনিয়মব্যাভিচারখাদ্যে ভেজাল দেওয়াসুযোগ পেলেই এক লাফে নিত্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে লাভবান হওয়ামানুষের সঙ্গে প্রতারণা করামানুষের ক্ষতি করাসহ তাবৎ খারাপ কাজগুলো করতেন না এমন পাপ করার প্রশ্নই উঠতো না এই দেশএই সমাজ জীবন হয়ে ওঠার কথা ছিল বেহেস্তখানার মত কিন্তু কইতা তো হয়নিতাহলে কীসের মুসলমানকীসের ধর্মপ্রাণকীসের ভাল মানুষ?

অনিময়অন্যায়গুলো কিন্তু আমরা এখন অতি সাধারণ মানুষরা বড় মাপে করছি এটা শুধু ধনিক শ্রেণী করছে নাবৃহত্তর জনগোষ্ঠী হিসেবে আমরা গরীব বা অতি গরীবরাও করছি করছি এই যুক্তিতে যেআমরা শোষিতবঞ্চিতগরীবদরিদ্র আসলে এইসব খোড়া যুক্তি আর বিশ্বাসের অস্তিত গড়ার ভেতর দিয়েই পুঁজিবাদ- সাম্রাজ্যবাদ আমাদের মগজ থেকে শুরু করে দেহের অনু-পরমানুতে পুঁজিবাদ- সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র ভর করিয়ে দিয়েছে অজান্তেই আমাদের কব্জা করে ফেলেছে মহাশত্রু ফলে আমরা এর অনুগত বা দাসে পরিণত হয়েছি

কিন্তু প্রশ্ন হলোঅনুগত বা দাস হয়ে কি আসলেই আমরা লাভবান হতে পারছিনাকি কখনও পারবোনাপারবো না বরং এই ভরের নিচে থেকে আমরা কেবলই শত্রুকে ঘাড়ে করে রাখবো তাদেরকে দীর্ঘজীবী করার সুযোগ দেবো কারণ হিসাবের কথাসমাজ বিজ্ঞানের কথাইতিহাসের কথা কিন্তু এটাই বলে

আমরা আমাদের নিঃস্ব এবং ধ্বংস করে দেওয়া পক্ষকে দেহের উপর চারও করে রেখে কখনই উপরে উঠতে পারবো না  ক্ষেত্রে একটাই পথসেটা হলোজোটবদ্ধ হওয়া একাট্টা হয়ে রুখে দাঁড়ানো মনে রাখতে হবেধর্মের নামে ভন্ডামি করেলোভের সাগরে ঝাপ দিয়েনিজেকে মানুষের বদলে পশুতে পরিণত করে ভাগ্য ফেরাতে পারবো না বরং এতেকরে ভাগ্য যারা নিয়ন্ত্রণ করেতারাই ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকবে আমাদের কেবলই ধ্বংস আর ধ্বংস হতে হবে সুতরাং আজ ভাবতে হবেআমরা ধ্বংস চাইনা বাঁচতে চাই



ইউক্রেন যুদ্ধ : রাশিয়ার আসল উদ্দেশ্য কি?

আবুল হোসেন খোকন

 রাশিয়া তার প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে অভিযান এখনও চলছেই অর্থাৎ ইউক্রেন থেকে ‘নাৎসীবাদ নিমূর্লতথা শাসক প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে প্রায় তিন মাস ধরে রাশিয়া তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেও সফল হয়নি যে কারণে যুদ্ধ চলছেই শুধু তাই- নয়দেখা যাচ্ছেযুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার বাহিনী অগ্রসরও হচ্ছেআবার প্রায়ই পিছু হটছেঅথবা যুদ্ধে বিফল হচ্ছে

এখন পরাশক্তি হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন না থাকলেও এই বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে পরাশক্তি হিসেবে ধরা হয় রাশিয়াকে কারণ তাদের হাতে কোন কোন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সমান অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি পরিমান অত্যাধুনিক সামরিক সাজ-সরঞ্জাম রয়েছে এই সাজ-সরঞ্জামের অন্যতম পারমানবিক অস্ত্র চাইলেই তারা বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে এই পৃথিবীকে ধ্বংসের জায়গায় নিয়ে যেতে পারে

এই হিসেব অনুযায়ীরাশিয়া যখন তার দুর্বল প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনের উপর সর্বাত্মক (জল,স্থলআকাশ পথেসামরিক অভিযান শুরু করেতখন মনে করা হয়েছিলদিন দুয়েকের মধ্যে ইউক্রেনের জেলেনস্কিসহ তার তাবৎ শক্তি-সামর্থ ধ্বংস হয়ে যাবে রাশিয়ার পূর্ণ দখলে চলে যাবে ইউক্রেন কিন্তু দেখা যাচ্ছেসে রকম কিছু তো ঘটেইনিবরং যুদ্ধের জয়-পরাজয় সমানে সমান অবস্থায় রয়ে গেছে রাশিয়া ইউক্রেন দখল করতে পারেনিজেলেনস্কি সরকারকে হটাতে পারেনিএমন কি জেলেনস্কিকে আত্মগোপন অবস্থায়ও নিয়ে যেতে পারেনি এইসঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়া অফিসারসহ বহু সেনা হারিয়েছেসামরিক ক্ষেত্রে অনেক ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হয়েছে বলার অপেক্ষা রাখে না যেইউক্রেন পক্ষেরও ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে এটাএকটি যুদ্ধের স্বাভাবিক ব্যাপারক্ষয়-ক্ষতি উভয় পক্ষেরই হয়ে থাকে একটি সাধারণ যুদ্ধের ফলাফলের মত এখানে সেটাই হয়েছে কিন্তু রাশিয়ার মত পরাশক্তি ক্ষমতাসম্পণœ একটি দেশের ক্ষেত্রে কি এটা স্বাভাবিক?

মোটেই তা নয় বরং রাশিয়ার মত শক্তির সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের সত্যই দুদিনের বেশি টিকে থাকার কথা ছিল নাহোক না তারা যতোই পশ্চিমা সামরিক সাহায্যপুষ্ট যুদ্ধে জেলেনস্কি সরকার তো দুরে থাকতাদের সবকিছু ধুলিস্মাৎ হয়ে যাবার কথা কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি আর হয়নি বলেই তৈরি হয়েছে প্রশ্নতৈরি হয়েছে রহস্যও

কারণএই যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর কৌশলগত যতো রকম শক্তি-সামর্থ্য বা নিষেধাজ্ঞার অস্ত্র ব্যবহার করার কথাতার সবই করা হয়েছে রাশিয়ার উপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে শুরু করে ‘গণশত্রুতামূলক যতো কলঙ্ক তিলক রয়েছেতারও সব চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সুতরাং তাদের হারাবার আর কিছু নেই তাদের ‘লজ্জা পাবারও আর কিছু নেই এই যদি হয় তাহলেতারা ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য সবই করতে পারেবা পারতো যেমন ইউক্রেন দখল করতে বড় মাপের বোমা মেরে ধ্বংস করে দিতে পারতো কিয়েভসহ জেলেনস্কি গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে পারতো পারমানবিক অস্ত্র বা অনুরুপ শক্তির মত সামরিক ক্ষমতা স্থলপথনৌপথ বা আকাশপথ ব্যবহার করে যে এসব ক্ষমতা ব্যবহার করার ঝামেলা ছিলতাও নয় এগুলো মস্কোয় বসে আঙ্গুলের ছোঁয়ায়- করা যেতো বা যায় অথচ অদ্ভুৎ ব্যাপার সবের কিছুই করেনি রাশিয়া করার কোন লক্ষণও নেই তাহলেতাহলে কেনকোন্ উদ্দেশ্যে ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যুদ্ধকে এভাবে চলমান রাখা হলোযুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী কেন নানা ক্ষেত্রে সংকট  জটিলতা তৈরি করা হলোএতোকিছুর পরও কেন এই যুদ্ধকে শেষ করা হচ্ছে না?

এসব প্রশ্ন কিন্তু এখন সবার মাঝে মজার ব্যাপার হলোরাশিয়া যে পথে রয়েছেএকই পথ বেছে নিয়েছে পশ্চিমারাও তারাও তো রাশিয়াকে এই সুযোগে আঘাত করা বা থামানোর জন্য জন্য ‘বড় কোন সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারতো পারতো যুদ্ধে সরাসরি নেমে পড়তে কিংবা পারতো ইউক্রেন বা জেলেনস্কি সরকারকে ‘ভয়ঙ্কর অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করতেযাতে করে ইউক্রেন বাহিনী রাশিয়াকে হটিয়ে মস্কোর দিকে ধেয়ে যেতে পারে কিন্তু  কাজটিও করেনি পশ্চিমা শক্তি তারা জেলেনস্কি সরকারকে এমনভাবে সহায়তা করছে যাতেতারা না পারে ‘মরে যেতেনা পারে ‘জয়ী হতে সুতরাং এখানেও একটি জটিল রহস্যবা প্রশ্ন হয়তো একটা সময় এসব প্রশ্নের বা রহস্যের উত্তর বেরিয়ে আসবে তবে এখন মানুষ ধাঁধাঁয় রয়েছেন গোটা বিশ্বকেই ধাঁধার মধ্যে আটকে ফেলা হয়েছে

আপাতত মনে হতে পারেতাহলে কি রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটো কোন গোপন সমঝোতায় চলছে অর্থাৎ তারা এই শান্তির বিশ্বে একটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছেআর এই যুদ্ধক্ষেত্রের বাজার থেকে যে যার মত হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেযেমন যুক্তরাষ্ট্রকে তেলের বাজার থেকে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছেসুযোগ করে দেওয়া হয়েছে অস্ত্র ব্যবসারকিংবা এই যুদ্ধের অজুহাতে একদিকে সামরিকআরেকদিকে অর্থনৈতিক হরিলুট ছাড়াও গোষ্ঠীগত সদস্য বাড়ানোর প্রতিযোগিতা তৈরি করে কোন মতলব বাস্তবায়ন করা হচ্ছেকারণ ন্যাটোও নানা চাপ এবং কূটকৌশল প্রয়োগ করে সদস্য বাড়াচ্ছেরাশিয়াও পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে অনুরুপ স্বার্থ হাসিল করার পথ বেছে নিয়েছেএটা কি উভয়পক্ষের সমঝোতা বা কূটকৌশলের ফসল?

সত্যিই এরকম কিছু যদি হয়ে থাকেতাহলে বলতেই হবেইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার উদ্দেশ্য ছিল ‘দেশটিকে দখল করা নয় উদ্দেশ্য অন্য কিছু ছিলবা রয়েছে আসল উদ্দেশ্যটাই এখন প্রকাশ হওয়া জরুরি তবে এটা পরিস্কাররাশিয়াও যেমন ইউক্রেন যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চাইছেবিপরীতে পশ্চিমা মহল বা যুক্তরাষ্ট্রও তাই- চাইছে এর প্রতিফলনই আমরা দেখতে পাচ্ছি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে

 

        আবুল হোসেন খোকন : লেখকসাংবাদিক  প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা





 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for Message